শিক্ষক দিবসের বক্তব্য 5th September | Teacher's Day

 আজ 5 ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস। আজ এই দিনটিতে সমস্ত শিক্ষকদের প্রতি আমার সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। 5 ই সেপ্টেম্বর ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন কারণ এই দিনে শিক্ষক দিবস পালন করা হয়ে থাকে। এই দিনে ভারতবর্ষের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রতি সম্মান ,শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টোটল বলেছিলেন - যারা শিশুদের শিক্ষাদানে ব্রতী তারা অভিভাবকদের থেকেও অধিক সম্মানীয়। পিতা-মাতা আমাদের জীবন দান করেন ঠিকই কিন্তু সেই জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেন।

শিক্ষক দিবসের বক্তব্য 5th September | Teacher's Day

একজন সফল মানুষের পিছনে শিক্ষকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে তা নতুন করে বলার কিছু নেই। শিক্ষা ছাড়া একটা জীবন প্রায় অচল। শিক্ষক যে পড়াশোনার ক্ষেত্রে ই হবে তা নয়। তিনি থাকতে পারেন জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রেই। তিনি যে শুধু পড়ুয়াকে শেখাবেন তা নয়, তিনি তাঁকে জীবনে চলার পথে পরামর্শ দেবেন, ব্যর্থতায় পাশে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দেবেন, সাফল্যের দিনে নতুন লক্ষ্য স্থির করে দেবেন। তিনি তাকে শুধু সফল নয় একজন ভালো মানুষ হতে শেখাবেন। একজন শিক্ষককে মোমবাতির সাথে তুলনা করা হয়ে থাকে কেননা মোমবাতি যেমন নিজে পুড়ে অন্যের পথ প্রদর্শন করে তেমনি শিক্ষক সারাজীবন ধরে তার মেধার মাধ্যমে শিক্ষাদান করে অন্যের পথ প্রদর্শন করে। শিক্ষকতা পেশা খুব সম্মানের একটি পেশা কারণ শিক্ষকরাই পৃথিবীর সমস্ত পেশার লোকেদের তৈরি করেন। তাই সমাজের মেরুদন্ড হলেন শিক্ষক।একমাত্র শিক্ষকরাই পারেন সমাজকে সঠিক ভাবে চালনা করতে, শিক্ষকরা একজন শিশুকে চরিত্র গঠনে এবং ভবিষ্যতে সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করেন। তাদের দায়িত্ববান ও সুনাগরিক গড়ে তুলতে পারেন তাই একজন সফল মানুষের পেছনে একজন শিক্ষকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে।


এবার আমরা জানবো কেন আজকের দিনটিতে শিক্ষক দিবস পালন করা হয়। এই দিনটি সম্পর্কে জানতে গেলে একজনের কথায় আমাদের মনে আসে যিনি হলেন ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ 1888 সালে আজকের এই দিনটিতে তামিলনাড়ুর তিরুট্টানি তে এক দরিদ্র পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন রাজনীতিবীদ, দার্শনিক,সর্বোপরি তিনি ছিলেন একজন প্রকৃত শিক্ষক। এই শান্ত মানুষটি ছাত্রজীবনে অতি মেধাবী ছিলেন, জীবনে কোন পরীক্ষায় দ্বিতীয় হননি। বিভিন্ন ভিত্তির মাধ্যমে তাঁর জীবন এগিয়ে চলে। 1905 সালে তিনি মাদ্রাজ খ্রিস্টান কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর বিষয় ছিল 'বেদান্ত দর্শনের বিমুর্ত পূর্বকল্পনা'। বিশ্বের দরবারে তিনি অতি জনপ্রিয় দার্শনিক অধ্যাপক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। 1931 সালে তাকে ব্রিটিশ নাইটহুডে সম্মানিত করা হয়। 1954 টে ভারতরত্ন সম্মান পান। প্রথম জীবনে তিনি মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন এ সময় তিনি বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য পত্রিকায় লিখতেন যে সময়ে তিনি লেখেন তার প্রথম গ্রন্থ 'The philosophy of Rabindranath Tagore'। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বারবার অধ্যাপনার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন।

ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ বলেছিলেন দেশের সবথেকে সেরা মস্তিষ্কের অধিকারী হলেন একজন শিক্ষক, শিক্ষকরাই তৈরি করেন আগামীর ভবিষ্যৎ, উন্নত দেশ।

রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তাঁর গুণমুগ্ধ ছাত্র ও বন্ধুরা তাঁর জন্মদিন পালন করতে চাইলে তিনি বলেন জন্মদিনের পরিবর্তে 5 ই সেপ্টেমরে যদি শিক্ষক দিবস হিসেবে উদযাপিত হয় তবে আমি অধিক সম্মানিত বোধ করব। সেই থেকে শুরু হয় শিক্ষক দিবস পালন করা এখনো সকল ভারতবাসী তাঁকে এবং সমস্ত শিক্ষকদের সম্মান জানানোর জন্য পালন করে থাকি।

কিন্তু এই একদিনের ভালোবাসা সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে কি শিক্ষকদের সঠিক সম্মান প্রদর্শন করা হয় ? একজন শিক্ষক যে সব সময়ের জন্যই শিক্ষক,শিক্ষক হচ্ছেন আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, শিক্ষক ছাড়া যোগ্য সমাজ ও উজ্জ্বল জীবন কল্পনাতীত তাই প্রতিটা দিনই আমাদের শিক্ষক দিবস হিসেবে মনে করা উচিত এবং প্রতিটি দিনই প্রত্যেকটা শিক্ষককে সম্মান শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রদর্শন করা উচিত।

Previous Post Next Post