ইতিহাস নিয়ে সমস্ত FAQ এর উত্তর
ইতিহাস কাকে বলে অথবা ইতিহাস বলতে কি বোঝ ?
সাধারণত ইতিহাসের নির্দিষ্ট সংঘা নিরূপণ করা খুবই কঠিন।তবে সাধারনত ইতিহাস বলতে যা বোঝায় অতীতের কোনো ঘটনার কলোনক্রমিক ,ধারাবাহিক এবং বিশ্লেষণধর্মী রচনা।বিশিষ্ঠ ইংরেজি ঐতিহাসিক জে বি বিউরি এর মতে
ইতিহাসের প্রকৃত অর্থেই বিজ্ঞান - তার কিছু বেশি বা কম নয়।
ঐতিহাসিক ই এইচ কার বলেছেন -
ইতিহাস হল ভাঙা টুকরো দিয়ে জোড়া এক বিশাল ধাঁধা যার অনেক টুকরো হারিয়ে গেছে।
ইতিহাস মানুষের অতীত ঘটনা ও কার্যাবলী অধ্যায়ন বৃহৎ একটি বিষয় হওয়া সত্বেও এটি কখনো মানবিক বিজ্ঞান এবং কখনও বা সামাজিক বিজ্ঞানের শাখা হিসেবে আলোচিত হয়েছে । অনেকে ইতিহাসকে মানবিক এবং সামাজিক বিজ্ঞানের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে দেখেন কারণ ইতিহাসে এই উভয়ভিত শাস্ত্র থেকেই পদ্ধতিগত সাহায্য ও বিভিন্ন উপাদান নেওয়া হয় । একটি শাস্ত্র হিসেবে ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করতে গেলে অনেকগুলো উপগবিভাগের নাম চলে আসে।যেগুলি হলো -
- দিনপঞ্জি
- ইতিহাস লিখন
- কুলজি শাস্ত্র
- পোলিওগ্রাফী
- ক্লায়মেট্রিক্স
সাধারণত ইতিহাস বিশেষজ্ঞগন লিখিত উপাদানের মাধ্যমেই ইতিহাসের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেন।যদিও লিখিত উপাদানের মাধ্যমে সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়।
ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে যে উৎসগুলো বিবেচনা করা হয় সেগুলিকে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়।যথা -
- লিখিত
- মৌখিক
- শারীরিক
ইতিহাস বিশেষজ্ঞরা সাধারণত তিনটি পদ্ধতি ই পরখ করে দেখেন ।সব সব থেকে নির্ভর যোগ্য উৎস হিসেবে লিখিত উপাদান সর্বজন স্বীকৃত।
সামাজিক ইতিহাস কাকে বলে ?
লক্ষ্য করলে দেখা যায় অতীত ইতিহাস শুধুমাত্র রাজা মহারাজা তথা সমাজের উচ্চ শ্রেণীর মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত। তবে সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে এখন ইতিহাসে উচ্চ শ্রেণীর মানুষের পাশাপাশি নিম্ন শ্রেণীর মানুষ এবং রাজনৈতিক ইতিহাসের পাশাপাশি সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসও প্রায় সমানভাবে জায়গা তথা গুরুত্ব পাচ্ছে। আধুনিক ইতিহাস চর্চার এই নব্য যুগান্তকারী ধারাকে সামাজিক ইতিহাস রূপে আখ্যায়িত করা হয়।কাকে ইতিহাসের জনক বলা হয় ?
হেরডোটাসকে ইতিহাসের জনক বলা হয়।ইতিহাসবিদ কাদের বলে ?
যে বিশিষ্ঠ ব্যক্তি ইতিহাস অর্থাৎ অতীত নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা ,অধ্যায়ন করেন এবং ইতিহাস সম্পর্কে লেখেন ও গবেষণার মাধ্যমে মতামত প্রকাশ করেন, মানব জাতির সাথে অতীতের ঘটনার সম্পর্ক বিশ্লেষণ করেন তাদের ইতিহাসবিদ বলে।ইতিহাস কিভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করে ?
ইতিহাস এমন একটি বিষয় যেটা পড়ে আমরা মানব সভ্যতার অতীত থেকে বিভিন্ন শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা তৈরী করতে পারি। প্রাচীনকালের বিভিন্ন সভ্যতা বা জাতির উত্থান পতন জানতে পারলে মানুষ সেই সব বিষয় গুলি শিক্ষা নিয়ে নিজেরা সাবধান হবে।এছাড়াও অতীতে ঘটে যাওয়া নানান ধরনের মহামারী,রাজনৈতিক হিংসা বা অর্থনৈতিক সংকট প্রভূতি থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা সচেতন হতে পারি।এই ভাবেই ইতিহাস সচেতন বৃদ্ধি করে।স্মৃতিকথা কিভাবে ইতিহাসের উপাদান ?
স্মৃতি কথায় সমকালীন প্রত্যক্ষদর্শীর অভিজ্ঞতার কথা উঠে আসে। এ গুলির বর্ণনা লেখকের নিজস্ব বিচার ধারণা ও মূল্যবোধের আলোকে পরিবেশিত হলেও তাতে সত্যের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই আধুনিক ইতিহাস চর্চার গুরুত্ব খুব বেশি । সরকারি নথিপত্র অনুল্লেখিত বিষয়গুলো স্মৃতি কথার অকপটে আলোচিত হয় বলে এইগুলো ইতিহাস চর্চায় বিশিষ্ঠ উপাদান হিসাবে স্বীকৃত হয়েছে।সত্তর বৎসরথেকে আমরা শ্রী হট্ট জেলার পৈল গ্রামের কথা, পুরনো কলকাতার কথা জানতে পারি ।
জীবনস্মৃতিথেকে ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহল ,হিন্দুমেলার ,রাজনারায়ণ বসুর ,নবীনচন্দ্র সেনের উল্লেখ পাওয়া যায় ।তাছাড়াও
জীবনের ঝরা পাতাথেকে ব্রিটিশ অর্থনীতির শোষণ , নীলচাষী ও সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচারের কথা প্রকাশিত হয়েছে।
ইতিহাস কেনো পড়বো ?
ইতিহাস পড়ার মাধ্যমে আমরা মানব সমাজের শুরু থেকে তার যাবতীয় কর্মকাণ্ড চিন্তা-চেতনা ও জীবনযাত্রা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারি। ইতিহাসের বিষয় হলো মানব সমাজের অগ্রগতির ধারা বর্ণনা করা যেমন সভ্যতার প্রধান স্তর, সভ্যতার সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক বিবর্তনের ইতিহাস তুলে ধরে। ইতিহাস অতীত সম্পর্কে জ্ঞান দেয় যা থেকে আমরা বর্তমানকে বিচার করতে পারি ।একটি জাতির ঐতিহ্য ও অতীতের গর্বিত ইতিহাসকে বর্তমানের মর্যাদাপূর্ণ কর্মতৎপরতা করতে পারে ।জাতীয় পরিচয় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের উপর ভিত্তি করে জাতীয়তাবাদ গড়ে ওঠে যা সমাজের উন্নতির একান্ত অপরিহার্য।আরো পড়ুনইতিহাস নিয়ে পড়লে কি কি চাকরি পাওয়া যেতে পারে ?
ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করলে আপনি যে চাকরি গুলো পেতে পারে তা নিম্নে আলোচনা করা হল -- শিক্ষকতা
- WBCS, ব্যাংক,পুলিশ এছাড়াও অনেক সরকারি চাকরি।
- গবেষক ও পত্নতত্ত্ববিদ
- জাদুঘর পরিচালনা অর্থাৎ জাদুঘরের সংরক্ষক ও বিবরকের চাকরী।
- NGO সংস্থায় চাকরী।
- সাংবাদিকতা করতে পারবেন । শুধু ইতিহাস পড়াশোনা শেষ করে একটা সাংবাদিকতার কোর্স করে নিতে হবে।
- বিভিন্ন সংবামাধ্যম বা পাবলিকেশন হাউসে লেখকের চাকরি পেতে পারেন।
- ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ঐতিহাসিক সিনেমাগুলোর জন্য স্ক্রিপ্ট লেখার চাকরী পেতে পারেন।