পঙ্গপাল কি ?পঙ্গপাল বিনাশ কি সম্ভব?পঙ্গপাল কোন কোন দেশে আক্রমণ করেছে ?ভারতে পঙ্গপাল প্রবেশ করেছে।
এতদিন আফ্রিকার কিছু দেশে এবং পাকিস্তানে আক্রমণ চালিয়েছিল পঙ্গপাল এবার ভারতের মধ্যপ্রদেশে ও রাজস্থানের কিছু অঞ্চলে প্রবেশ করে ফেলেছে।এই প্রতিবেদনে জানুন পঙ্গপালের ব্যাপারে সমস্ত তথ্য।
একক পঙ্গপাল কে ইংরেজিতে বলা হয় Locust।একা থাকা কালিন পঙ্গপাল জন্য তেমন ক্ষতিকর নয় তবে বিশেষ বিশেষ কিছু প্রাকৃতিক পরিবেশে পঙ্গপালের আচরণগত বিরাট পরিবর্তন লক্ষ করা যায় এবং তখন তারা মারাত্মক ক্ষতিকর পরিণত হয় পঙ্গপালের মস্তিষ্কের বিশেষ পরিবর্তনের ফলে তারা অতি দ্রুত সন্তান জন্মদানকারী এবং ধীরে ধীরে সামান্য থেকে বিশাল দলে গড়ে তোলে।পঙ্গপালের সংখ্যা অসম্ভব বৃদ্ধি পেলে এদের মধ্যে উড়ে বেড়ানোর প্রবৃত্তি জাগে তখন তারা নতুন নতুন খাদ্যশস্যের গন্ধ শুকে খাবারের সন্ধানে খুঁজে বের করে।তারপর সেই অঞ্চলের খাদ্য শস্য শেষ করে পঙ্গপাল নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে সেই অঞ্চল দ্রুত ত্যাগ করে। মাটিতে পঙ্গপালের ডিম দীর্ঘকাল টিকে থাকতে পারে এমনকি 20 বছর পরেও মাটিতে পড়ে থাকা পঙ্গপালের ডিম থেকে বাচ্চা হতে পারে বাচ্চা পঙ্গপাল উঠতে পারে না অল্প বয়সেই পতঙ্গ গুলো লাফিয়ে চলে সাধারণত একটি বাচ্চা পূর্ণ বয়স্ক হতে প্রায় চার সপ্তাহ সময় লাগে পূর্ণ বয়স্ক হবার পর তাদের শারীরিক গঠন খুব দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে।
একটি প্রাপ্তবয়স্ক পঙ্গপাল প্রতিদিন তার নিজের ওজনের সমান খাদ্য গ্রহণ করেন আর পঙ্গপালের একটি ঝাঁক 1 দিনে হাজার হাজার টন খাদ্যশস্য খেয়ে ফেলতে পারে এসব প্রতিনিয়ত এগিয়ে যেতে থাকে যাতায়াতের সময় পঙ্গপাল নিজের দেহের শক্তি সঞ্চয় করে বাতাসের উপর ভর করে এগিয়ে চলে। বাতাসের গতি পথ অনুসরন করে চলার ফলে বাতাস যেদিকে যাই সেদিকেই আক্রমণ করে ।এক একটি পঙ্গপালের যাত্রা পথে আরো নতুন নতুন ঝাঁকের সাথে যুক্ত হয়ে আরো অতিকায় ঝাঁকের তৈরি করে।এক একটি ঝাঁকে কয়েক বিলিয়ন পঙ্গপাল থাকতে পারে অতি বৃহৎ একটি পঙ্গপালের ঝাঁক 60/65 কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে আর প্রতি কিলোমিটারের ঝাকে 4 থেকে 8 কোটি পতঙ্গ থাকতে পারে এই বিশাল পঙ্গপালের দল তাদের চলার পথে খাবার উপযোগী সকল কিছুর সাবাড় করে যায় পঙ্গপালের আক্রমণে ব্যবস্থায় মারাত্মক কোন এলাকায় আক্রমণ করলে সেখানকার কোন গাছের পাতা অবশিষ্ট থাকে না গত বছরগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে 4 গুণ পর্যন্ত বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে 2019 সালের শেষে এবং 2020 সালের শুরুর দিকে পৃথিবীর একাধিক অঞ্চলে ব্যাপক বংশ বৃদ্ধি ঘটেছে এর মধ্যে সোমালিয়া, ইথিওপিয়া, কেনিয়া,উগান্ডা সহ আরো অনেক অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে ।
পঙ্গপাল আক্রান্ত অঞ্চলে হেলিকপ্টার ও বিমান থেকে কীটনাশক ছিটিয়ে এদের দমন করা যাচ্ছে না। এছাড়া প্রায় একই সময়ে মরুভূমির পঙ্গপাল পাকিস্তানের আক্রমণ করেছে 2019 সালের মার্চে পাকিস্তানের প্রথমবারের মতো পঙ্গপালের আক্রমণে সিন্ধুর দক্ষিণ পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনওয়া অঞ্চলের প্রায় 9 লক্ষ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়। সম্প্রতি পাকিস্তানের আক্রমণ কারী পঙ্গপাল ভারতে উঠে পড়েছে ।কেনিয়া এবং পাকিস্তানের মধ্যে পঙ্গপালের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। জাতিসংঘের আশঙ্কা এদের ঠেকাতে না পারলে জুন নাগাদ তাদের সংখ্যা 500 গুণ বৃদ্ধি পেতে পারে ধারণা করা হচ্ছে আফ্রিকার ত্রিশটি দেশে এই পতঙ্গ ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে পরিস্থিতি আরো খারাপ হলে বিশ্বের প্রায় 20% ফসলি জমিত আক্রান্ত হবে এর ফলে পৃথিবীর দশ ভাগের এক ভাগ মানুষের বেঁচে থাকার জন্য খাবারের অভাব দেখা দিতে পারে। গত 24-25 ভারতের মধ্য প্রদেশে এবং রাজস্থানের মধ্যে পঙ্গপাল প্রবেশ করেছে।