আমাদের সাথে জুড়ে থেকে প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হন অথবা হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করুন।লিংক নীচে দেওয়া আছে।
১. চিত্রসহ নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গড়ে ওঠা দুটি ভূমিরূপের বর্ণনা দাও।
ত্রিকোণ পললভূমি বা পলল ব্যজনী :
পার্বত্য অঞ্চল ছেড়ে নদী সমভূমিতে এসে পড়লে ভূমির ঢাল হঠাৎ কমে যায় বলে নদীর স্রোত ও বহন ক্ষমতা দুটি কমে যায়। এর ফলে সমভূমিতে অবতরণের সময় অর্থাৎ পর্বতের পাদদেশে অঞ্চলে নদী উপত্যকায় পলি, বালি, কাঁকর প্রভৃতি জমে ত্রিকোণ পলল ভূমির সৃষ্টি হয়। প্রধানত পলি গঠিত এবং ব্যজনী এর মত দেখতে হয় বলে পলল ব্যজনী ও বলা হয় ।
উদাহরণ : হিমালয় পাদদেশে গঙ্গার বিভিন্ন উপনদীর গতিপথে এই ধরনের ভূমিরূপ দেখা যায়।
নদী চর :
সমভূমিতে নদীর গতি বেগ কম থাকার দরুন পার্বত্য অঞ্চল থেকে বয়ে আনা বিপুল পরিমাণ নূরী পাথর বালি প্রভৃতি নদীবক্ষে সঞ্চিত হয় এবং জলপ্রবাহ কে রুদ্ধ করে এইভাবে নদীবক্ষে চরের আকারে সঞ্চিত পলিরাশিকে নদী চর বা বালুচর বলে।
উদাহরণ : অসম সমভূমিতে ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথে অসংখ্য চর বা দ্বীপ সৃষ্টি হয়েছে।
২.মরু সম্প্রসারণ রোধের তিনটি উপায় উল্লেখ করো।
মরুভূমি সম্প্রসারণ প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের নিম্ন লিখিত উপায় গুলো অবলম্বন করা উচিত :
i) বনভূমি তৈরি : মরুভূমির প্রান্ত বরাবর নিবিড় ভাবে বনভূমি গড়ে তুলতে হবে ।এমন উদ্ভিদ রোপণ করতে হবে যা মরু জলবায়ু উপযুক্ত ।ওই বনভূমি সংরক্ষণ এর ও ব্যবস্থা গ্রামবাসীদের সাহায্য করতে হবে ।
ii) পশুচারণ এর বদলে পশু পালন করতে হবে : পশুচারণ এ মাটি ক্ষয় বাড়ে তাই পশুচারণ এর বদলে গৃহে পশুপালন করতে হবে।এতে মাটি ক্ষয় কম হবে ।
iii) জ্বালানির উৎস সন্ধান : কাঠ কে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে এবং গোবর গ্যাস, ঘুটে, কেরোসিন, এলপিজি ও অন্যান্য পদ্ধতির বা বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার করতে হবে যাতে গাছ বেঁচে যায়।
iv)ভূমির সুস্থিত ব্যাবহার : মরুভূমিকে চাষবাসের জন্য মিশ্র কৃষি, মরুভূমিতে চাষ করা যায় এমন ফসল নির্ধারণ, মাটিতে জৈব সারের ব্যবহার, বিজ্ঞান ভিত্তিক এবং আধুনিক জলসেচ পদ্ধতি, জৈব কৃষি, জলের সঠিক ব্যবহার ইত্যাদির মাধ্যমে মরুভূমির সম্প্রসারণ অনেকটা আটকানো সম্ভব ।
v) জল সংরক্ষণ : মরুভূমিতে খুব কম বৃষ্টি হলেও যখন বৃষ্টি হয় তখন দ্রুত অনেকখানি বৃষ্টিপাত হয় ওই জলের চিরাচরিত সংরক্ষণ পদ্ধতি, ভৌম জলের পরিমাণ বাড়ানো, জলের অপচয় কমানো, জলের বহুমুখী ব্যবহার এসব করতে পারলে মরুভূমির প্রসার আটকানো যেতে পারে ।
৩.ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলের সমভূমির মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করো।
বিষয় | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি | পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি |
---|---|---|
প্রকৃতি | এটি একটি উত্থত উপকূল | এটি একটি চ্যুতি গঠিত নিমজ্জিত উপকূল। |
দৈর্ঘ্য | এর দৈর্ঘ্য 1500 কিমি প্রায় | এর দৈর্ঘ্য প্রায় 1600 কিমি |
বিস্তার | এর গড় বিস্তার 80-100 কিমি।ভূমিকায় চওড়া | এর গড় বিস্তার 60-65 কিমি। উপকুলভাগ সংকীর্ণ। |
বালিয়াড়ি | সমগ্র উপকূল বরাবর বালিয়াড়ি দেখা যায়। | মালাবার উপকূল ছাড়া বালিয়াড়ি বিশেষ দেখা যায় না |
৪. অতিরিক্ত ভৌম জল উত্তোলনের প্রভাব গুলি বর্ণনা করো।
ভূপৃষ্ঠের নিচে মাটি, রেগোলিথ কিংবা শিলা এর মধ্যে যে জল পাওয়া যায় তাকে ভৌম জল বলে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে, কৃষিকার্যে, শিল্পক্ষেত্রে ভৌম জলের গুরুত্ব অপরিসীম। দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষিতে জলসেচের প্রসার, শিল্প ক্ষেত্রে জলের চাহিদা বৃদ্ধি প্রভৃতি কারণে ভৌমো জল আজ ব্যাপকহারে ব্যবহৃত হচ্ছে ।ভৌম জলের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে যে সমস্ত সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করবে সেগুলি হল -i) জলস্তর এর পতন : মাটির নীচে ভৌম জলের সম্পৃক্ত স্তর ধীরে ধীরে আরো নিচে নেমে যাবে।ফলে,অগভীর কূপ - নল কূপের মাধ্যমে জল পাওয়া যাবে না।
ii) পনীয় জলের সংকট : মানুষের পনীয় জলের প্রধান উৎস হল ভৌমজল। তাই অতিরিক্ত ভৌমজল ব্যাবহারের ফলে বিশ্ব জুড়ে পনীয় জলের সংকট তীব্র আকার ধারণ করবে।
iii)সেচের জলের অভাব : ভারতে কূপ নলকূপের সাহায্যে ভৌমজল তুলে সবচেয়ে বেশি জমিতে (60.9%) জলসেচ করা হয়। ভৌম জলের সংকট দেখা দিলে প্রয়োজনীয় সেচের জল পাওয়া যাবে না ফলে কৃষি উৎপাদন কমে যাবে ।
iv) মাটির লবনতা বৃদ্ধি : কূপ ও নলকূপের জলে মাটির নিচের স্তর থেকে লবণ দ্রবীভূত হয় মাটির উপরের স্তরে এসে সঞ্চিত হয়। তাই ভৌম জল সেচ কার্যে যত বেশি ব্যবহৃত হয় মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেতে থাকে ।
v)রোগের প্রাদূর্ভাব : মাটির নিচ থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে জল তোলা হলে ভৌম জলের সঙ্গে আর্সেনিক ফ্লোরাইড আয়রন নাইট্রেট প্রভৃতি খনিজ মিশে যায়। এই খনিজ মিশ্রিত বিষাক্ত জল ব্যবহারের নানা রোগ সৃষ্টি হয় ।