আমাদের সাথে জুড়ে থেকে প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হন ।লিংক নীচে দেওয়া আছে।
১. মরু অঞ্চলে বায়ুর কাজের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায় কেনো ?
মরু অঞ্চলে বায়ুর কাজের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায় তার কারণ গুলি নিম্নে আলোচনা করা হলো :i) বাধাহীন বায়ু প্রবাহ : মরু অঞ্চলে বায়ু অবাধে তার বাহিত পদার্থকে অনেকদূর টেনে নিয়ে যায় ।
ii) উষ্ণ ও শুষ্ক বায়ুর উপস্থিতি : মরু অঞ্চলে বায়ুর আদ্রতা কম থাকার ফলে সেটি অত্যন্ত উষ্ণ হয়ে ওঠে। এতে উপরের স্তরের বালুরাশি শুষ্ক ও হালকা হয়ে বহু দূরে উড়ে যায় ।
iii) ঝড়ো বাতাসের প্রাধান্য : ঝড়ো বাতাসের জোর বেশি।এতে বাতাসে বাহিত বালুকনার আগে যেমন শিলার ক্ষয় হয় তেমনই ক্ষয়িত পদার্থ বহুদূরে উড়ে ভূমিরূপ গঠন করে ।
iv) উদ্ভিদশুণ্যতা : বালুকণা কে মাটিতে আটকে রাখতে পর্যাপ্ত সংখ্যক উদ্ভিদের অভাব থাকায় মরু অঞ্চলে বায়ুর খুব সহজ ও দ্রুত কাজ করে ।
v) শুষ্ক জমি ও জলাভাব : শুষ্ক - উষ্ণ আবহাওয়ার জন্য ওপরের মাটির স্তর শুষ্ক ও রুক্ষ থাকায় মাটি ভঙ্গুর ও আলগা হয় এবং প্রবল বাতাসের আঘাতে তা গুড়ো হতে থাকে ।
২.কিভাবে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন সুন্দরবনকে প্রভাবিত করছে ?
কিভাবে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন সুন্দরবনকে প্রভাবিত করছে সেগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল :
i)সমুদ্র জলের উচ্চতা বৃদ্ধি : বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পার্বত্য ও মেরু অঞ্চলের বরফ গলনের ফলে সমুদ্রের জল বৃদ্ধি পাচ্ছে ।সুন্দরবন অঞ্চলের গড় উচ্চতা বছরে প্রায় 3.3 মিমি বাড়ছে তা পৃথিবীর গড় জলতল বৃদ্ধির তুলনায় দু গুণ বেশি। 1930 থেকে 2019 সাল পর্যন্ত সুন্দরবনের প্রায় 250 বর্গ কিমি এলাকা জলের তলায় ডুবে গেছে ।
ii) ম্যানগ্রোভ অরণ্যের বিনাশ : উপকূল অংশে জলের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ডুবে থাকার জন্য ও ক্ষয় এর পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ ধ্বংস হচ্ছে।নতুন ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ জন্মাতে পারছে না।
iii) লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও কৃষিক্ষেত্রে প্রভাব : সমুদ্র জলের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে সুন্দরবন এলাকার নদীগুলির জলের লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলে প্রাণী ও উদ্ভিদ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। কৃষি জমির লবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলে ফসল উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে ।
iv) উপকূলের ক্ষয়ের মাত্রা বৃদ্ধি : জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।সমুদ্রের ঢেউ এর তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলে উপকূল অঞ্চলে ক্ষয় এর মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্বীপ গুলি ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে ।
v)দ্বীপের বিনাশ : 1975 সালে ঘোড়ামারা দ্বীপের ক্ষেত্রফল 8.15 বর্গ কিমি ছিল 2012 সালে টা কমে 4.43 বর্গ কিমি হয়েছে।
1980 সালে লোহাচড়া দ্বীপ হলে নিমজ্জিত হয়। 2006 সালে সব বসতি অন্যত্র সরাতে হয়।
৩. বৃষ্টির জল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা কী ?
জলের অপর নাম জীবন।বর্তমানে ভালো মানের জল পাওয়া খুবই কষ্ট সাধ্য ব্যাপার।বৃষ্টির জল ভালো গুণ সম্পন্ন হয় কিন্তু আমরা অবাদে নষ্ট করি।বৃষ্টির জল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা গুলি হল :- বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করলে বন্যা রোধ করা যায় ।
- বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করলে ভূমিক্ষয় রোধ করা যায়।
- ভৌমোজল এর ভান্ডার বৃদ্ধি পাবে।
- ভূগর্ভস্থ জলের বিশাল উৎস হিসেবে কাজ করবে বৃষ্টির জল ।
- পানীয় জলের চাহিদা পূরণ হবে ।
- কৃষিকাজে জলের চাহিদা পূরণ করা যাবে ।
- শিল্প ও বিভিন্ন অর্থনৈতিক কাজে জলের পর্যাপ্ত গান বজায় রাখা যাবে ।
- ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জলের পর্যাপ্ত চাহিদা ও যোগান সুনিশ্চিত করা সম্ভবপর হবে ।
৪. এল নিনো ও লা নিনা কিভাবে মৌসুমী বায়ুকে প্রভাবিত করে ?
এল নিনো :এল নিনো একটি স্প্যানীয় শব্দ যার অর্থ ' শিশু খ্রিস্ট ' কোন কোন বছর ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে পেরু ও ইকুয়েডর উপকূল বরাবর উত্তরমুখী শীতল হামবল্ড স্রোতের পরিবর্তে দক্ষিণমুখী উষ্ণ সমুদ্রস্রত এর নিস্তেজ প্রবাহকে এল নিনো বলে।
ভারতীয় মৌসুমী বায়ুর উপর এল নিনোর প্রভাব :
এল নিনোর আবির্ভাব এর বছরে ভারতীয় মৌসুমী বায়ু ও বৃষ্টিপাত এর উপর খারাপ প্রভাব পড়ে। এল নিনোর ফলে পেরু, চিলি ও ইকুয়েডর উপকূলে সমুদ্রের উপর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়।ফলে ভারত মহাসাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে পড়ে। ভারত মহাসাগরে যে পরিমাণ উষ্ণ ও আদ্র মৌসুমী বায়ু নিরক্ষ রেখা অতিক্রম করে ভারতবর্ষে আসার কথা তা প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব অংশে সৃষ্ট নিম্নচাপ ক্ষেত্রের জন্য আসতে পারে না ফলে ভারতবর্ষে বর্ষাকালে কম বৃষ্টিপাত বা অনিয়মিত বৃষ্টিপাত হয় ভা।রতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য গুলি তে খরা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ।লা নিনা :
লা নিনা শব্দের অর্থ শিশুকন্যা এটি এল নিনোর বিপরীত অবস্থা। বায়ু সঞ্চালনের স্বাভাবিক আবহাওয়ায় অক্ষরেখা বরাবর বায়ু পূর্বদিকের উচ্চচাপ বলয় থেকে পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয় এই অবস্থায় সমুদ্রের উষ্ণতা স্বাভাবিকের থেকে 4 ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে গেলে পেরু - চিলি উপকূল বরাবর যে শীতল সমুদ্র স্রোত প্রবাহিত হয় তাকে লা নিনা বলে ।
ভারতীয় মৌসুমি জলবায়ুর উপর লা নিনার প্রভাব :
লা নিনার প্রভাবে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়ায় বৃষ্টিপাত হয় এর প্রভাবে ভারতের মৌসুমী বায়ু প্রবাহ স্বাভাবিক থাকে নিয়মিত বৃষ্টিপাত হয়।