বাংলা মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক পার্ট ৩ দশম শ্রেণী |ওই ভাঙা গড়া খেলা যে তার কিসের তরে ডর কবির এই মন্তব্যটি কোন ইঙ্গিতবাহী?

আমাদের সাথে জুড়ে থেকে প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হন অথবা হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করুন।লিংক নীচে দেওয়া আছে।

বাংলা মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক পার্ট ৩ দশম শ্রেণী |ওই ভাঙা গড়া খেলা যে তার কিসের তরে ডর কবির এই মন্তব্যটি কোন ইঙ্গিতবাহী?

নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখ:

১. "তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায়"- বহুরূপী গল্পের আলোকে উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: আলোচ্য উদ্ধৃতিটির বক্তা হলেন সুবোধ ঘোষ রচিত "বহুরূপী" গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা।

    হরিদার জীবনে একটি নাটকীয় বৈচিত্র্য ছিল।সকাল সন্ধ্যায় বিচিত্র সব ছদ্মবেশে অপরূপ হয়ে সে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ত। হরিদা যখন যে রূপ ধারণ করতো, সেই চরিত্র টির সঙ্গে সে যেন একাত্ম হয়ে যেত। জগদীশ বাবুর বাড়ি সে বিরাগী সেজে গিয়েছিল। জগদীশবাবু হরিদা কে বিরাগী ভেবে ভুল করেছিল এবং পূণ্য অর্জনের জন্য তাকে টাকা দিতে চেয়েছিলেন। বিরাগী হরিদা সেই টাকা স্পর্শ মাত্র না করে সেখান থেকে চলে যান। হরিদা অভাবের মধ্যে দিনাতিপাত করত। চাইলেই সে টাকাটা নিয়ে নিতে পারতো। কিন্তু সে তা করেনি। এখানে বিরাগী চরিত্রটির সঙ্গে হরিদা একাত্ম হয়ে গেছে।

    একজন বিরাগী যে সংসার ধর্ম ত্যাগ করেছে সে কোনদিনই বিষয়ী হয় না, টাকা সোনা দানা কিছুই স্পর্শ করেনা।এখানে হরিদাও তাই করেছে। হরিদা পেশায় বহুরূপী হলেও এখানে সে বিরাগী চরিত্রের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেছে। তাই বিরাগী হয়ে টাকা কেন নেননি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন তাতে তার ঢং নষ্ট হয়ে যেত।

২. "ঘুচাব এ অপবাদ, বধি রিপুকূলে"- বক্তা কে? কোন অপবাদের কথা তিনি বলেছেন? উক্ত অপবাদ ঘোচানোর জন্য বক্তা কিভাবে প্রস্তুত হলেন?

উত্তর: আলোচ্য উদ্ধৃতিটির বক্তা হলেন মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা "মেঘনাদবধ" কাব্য থেকে সংকলিত "অভিষেক" নামক কবিতার নায়ক ইন্দ্রজিৎ।

     বীরশ্রেষ্ঠ ইন্দ্রজিৎ লঙ্কার প্রমোদ কাননে বিলাসে মেতে উঠেছিলেন। এই সুযোগে রঘুপতি রামচন্দ্র বীরবাহু কে হত্যা করেন। শত্রুদল লঙ্কাপুরী কে ঘিরে ফেলেছে, অথচ ইন্দ্রজিৎ প্রমোদ উদ্যানে সুখ বিলাসে রত। নিজের এই আচরণকে তিনি অপবাদ মনে করেছেন।

      উক্ত অপবাদ ঘোচানোর জন্য ইন্দ্রজিৎ যুদ্ধ সাজে সজ্জিত হয়েছেন। মেঘবর্ণ রথ, যার চাকায় বিদ্যুতের ছটা, ইন্দ্রধনুর মত স্বর্ণপ্রভা রাক্ষস পতাকা এবং অশ্ব বাহিনী নিয়ে ইন্দ্রজিৎ যুদ্ধ যাত্রার প্রস্তুতি নিয়েছেন।

৩. "তোমাদের কাছে আমি লজ্জিত"- বক্তা কাদের কাছে কেন লজ্জিত তা "সিরাজদ্দৌলা" নাট্যাংশ অনুসরণে আলোচনা করো।

উত্তর: শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা "সিরাজদ্দৌলা" নাট্যাংশে নবাব সিরাজদ্দৌলা ফরাসি প্রতিনিধি মসিয়ে- লা কে জানিয়েছেন যে তিনি ফরাসিদের কাছে লজ্জিত।

         ইংরেজদের কাছ থেকে চন্দননগর রক্ষার জন্য মসিয়ে-লা সিরাজের দরবারে এসেছিলেন নবাবের সাহায্য প্রার্থনা করতে। নবাব ফরাসিদের সঙ্গে বাংলার দীর্ঘদিনের বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। নবাবের সঙ্গে তারা যে কখনো অসৎ ব্যবহার করেননি সে কথাও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বীকার করেন। সিরাজ তাকে জানান ইংরেজরা তার সম্মতি না নিয়ে চন্দননগর অধিকার করেছে এবং ফরাসিদের সমস্ত বাণিজ্য কুঠি ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে- তিনি এসব বিষয়ে অবহিত। কিন্তু কলকাতা জয় করতে গিয়ে এবং পূর্ণিয়ায় শওকত জঙ্ঘের লড়াই এ তার প্রচুর লোক ক্ষয় এবং অর্থ ব্যয় হয়েছে। তাছাড়া নবাবের মন্ত্রিপরিষদ ও নতুন কোন যুদ্ধে আগ্রহী নন। সেই কারণে ফরাসিদের প্রতি পূর্ণ সহানুভূতি থাকলেও তার পক্ষে এই মুহূর্তে ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধ করা সম্ভব নয়। এই অক্ষমতার জন্য মসিয়ে-লা এর কাছে সিরাজদ্দৌলা ক্ষমা প্রার্থনা ও লজ্জা প্রকাশ করেছেন।

৪. "ওই ভাঙা-গড়া খেলা যে তার কিসের তরে ডর?"- কবির এই মন্তব্যটি কোন ইঙ্গিতবাহী?

উত্তর: কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত "প্রলয়ল্লাস" কবিতায়  "ভাঙ্গা গড়া খেলা" বলতে মহাকালের রুদ্ররূপে জীর্ণ পুরাতন সৃষ্টিকে ধ্বংস করা ও শুভঙ্কর রূপে নতুন জগৎ সৃষ্টি করাকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই কখনো শান্তির পথে হতে পারে না। ভয়ঙ্কর মূর্তিতেই সুন্দরের অভিষেক হয়। বাস্তব জীবনেও ধ্বংসের মধ্যে নিহিত থাকে সৃষ্টির বীজ। তাই কবির মতে ভাঙ্গন দেখে ভয় না করে জয়ধ্বনী করা প্রয়োজন। কারণ ভয়ঙ্কর এর মধ্য দিয়ে অভয়ের প্রতিষ্ঠা ঘটে। তাই সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। ভয়ঙ্কর এর বেশে সুন্দরের আগমনকে স্বাগত জানানোর কথাই কবি এখানে বলেছেন।

৫. "বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে,কিন্তু শখ ষোলো আনাই বজায় আছে"- বাবুটি কে? তার স্বাস্থ্য এবং ষোলআনা শখের পরিচয় দাও।

উত্তর: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা "পথের দাবী"  রচনাংশে বাবুটি হলেন গিরিশচন্দ্র মহাপাত্র। 

         আলোচ্য রচনায় বাঙালি পুলিশ অফিসার নিমাইবাবু গিরিশচন্দ্র মহাপাত্র সম্পর্কে উপরিউক্ত উক্তিটি করেছেন। বাবুটির যে স্বাস্থ্যের পরিচয় আমরা পাই তা হল- লোকটি ছিল ভীষণ রোগা, একটুখানি কাশির পরিশ্রমেই সে হাপাচ্ছিল। কিন্তু লোকটির চোখের দৃষ্টি ছিল অদ্ভুত। তাঁর চোখ দু'টি ছিল গভীর জলাশয় এর মত রহস্যময়।

         রচনাংশে বাবুটির ষোলআনা শখের যে পরিচয় পাই তা হল- গিরীশ মহাপাত্রের গায়ে ছিল জাপানি সিল্কএর রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি, তার বুক থেকে বাঘ আঁকা একটি রুমালের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছিল। পরনে বিলাতি মিলের কালো মখমল পাড়ের সূক্ষ্ম শাড়ি, পায়ে সবুজ রঙের ফুলমোজা, পায়ে বার্নিশ করা পামশু , হাতে হরিণের শিং এর হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি। রোগা ক্ষীণদেহী মানুষটার এই পোশাকের বাহার দেখেই নিমাইবাবু আলোচ্য উক্তিটি করেছিলেন।

Previous Post Next Post