Geography Model Activity Task Part 3 Class 9 | ভূ-জালকের সাহায্যে কিভাবে ভূপৃষ্ঠে কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয় করা হয়?

আমাদের সাথে জুড়ে থেকে প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হন অথবা হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করুন।লিংক নীচে দেওয়া আছে।

নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও।

 ১. চিত্রসহ পৃথিবীর তাপ মন্ডল এর বিবরণ দাও।

পৃথিবী গোলাকার হওয়ায় অক্ষাংশ যুক্ত অঞ্চলে সূর্য রশ্মি বিভিন্ন কোণে কিরণ দেয়। কোথাও লম্বভাবে, কোথাও তীর্যকভাবে সূর্য রশ্মি ভূপৃষ্ঠের উপর পতিত হয়। ফলস্বরূপ অক্ষাংশের ভিত্তিতে একেকটি উষ্ণতা যুক্ত অঞ্চল পৃথিবী কে বলয় এর আকারে বেষ্টন করে আছে। এদের তাপ বলয় বলা হয়।

 মোট পাঁচটি তাপ বলয় পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে। মূলত এই তাপবলয় গুলিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- 

 A. উষ্ণ মন্ডল:-

 নিরক্ষরেখার উত্তরে কর্কটক্রান্তি রেখা থেকে নিরক্ষরেখার দক্ষিনে মকরক্রান্তি রেখা পর্যন্ত বৃস্তিত অঞ্চল উষ্ণ মন্ডল নামে পরিচিত। সারাবছর সূর্য রশ্মি লম্বভাবে বা প্রায় লম্বভাবে পতিত হওয়ায় এবং দিন রাত্রির দৈর্ঘ্য প্রায় সমান হওয়ায় এখানে উষ্ণ মন্ডল গড়ে উঠেছে।

 বৈশিষ্ট্য:- 

  •  i) সারা বছর এখানে সূর্য রশ্মি লম্ব ভাবে পতিত হয়।
  •  ii) সারাবছর দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য প্রায় সমান থাকে।
  •  iii) এই অঞ্চলে ঋতু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় না।
  •  vi)অন্যান্য তাপমন্ডল এর তুলনায় উষ্ণতা এখানে বেশি থাকে।

 B. নাতিশীতোষ্ণ মন্ডল:-

 উত্তর গোলার্ধে কর্কটক্রান্তি রেখা থেকে সুমেরুবৃত্ত পর্যন্ত এবং দক্ষিণ গোলার্ধে মকরক্রান্তি রেখা থেকে কুমেরু বৃত্ত পর্যন্ত অঞ্চল নাতিশীতোষ্ণ মন্ডল নামে পরিচিত। উত্তর গোলার্ধের নাতিশীতোষ্ণ মন্ডল কে উত্তর নাতিশীতোষ্ণ মন্ডল এবং দক্ষিণ গোলার্ধের নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলকে দক্ষিণ নাতিশীতোষ্ণ মন্ডল বলে। সূর্য রশ্মির পতনকোণ মধ্যম প্রকৃতির হওয়ায় নাতিশীতোষ্ণ মন্ডল সৃষ্টি হয়েছে।

 বৈশিষ্ট্য:-

  •  i) সূর্য রশ্মির পতনকোণ মধ্যম প্রকৃতির।
  •  ii) বার্ষিক উষ্ণতার প্রসর অধিক।
  •  iii) নিম্ন অক্ষাংশ থেকে উচ্চ অক্ষাংশের দিকে তাপমাত্রা দ্রুত কমতে থাকে।

C. হিম মন্ডল:-

 উত্তর গোলার্ধে সুমেরু বৃত্ত থেকে সুমেরু বিন্দু পর্যন্ত এবং দক্ষিণ গোলার্ধে কুমেরু বৃত্ত থেকে কুমেরু বিন্দু পর্যন্ত অঞ্চল হিম মন্ডল নামে পরিচিত।

 বৈশিষ্ট্য:-

  •  i) সূর্য রশ্মি অত্যন্ত তীর্যকভাবে কিরণ দেয়।
  •  ii) দিন ও রাত্রির দৈর্ঘ্যের পার্থক্য অনেক বেশি।
  •  iii) বার্ষিক গড় উষ্ণতা 0⁰c এর কম হয়।
  •  vi) অঞ্চলটি অধিকাংশ সময়ই বরফে ঢাকা থাকে।
  •  v) মাঝে মাঝে অরোরা দেখা যায়।

চিত্রসহ পৃথিবীর তাপ মন্ডল এর বিবরণ দাও।

২. যুক্তি সহকারে নিরক্ষরেখা কে মহাবৃত্ত বলার কারণ ব্যাখ্যা করো।

প্রত্যেকটি অক্ষরেখা পূর্ণবৃত্ত। একমাত্র নিরক্ষরেখা ছাড়া সব অক্ষরেখার পরিধি নিরক্ষরেখা তুলনায় কম অর্থাৎ ক্ষুদ্রতম। নিরক্ষরেখা পৃথিবীর উপরে অবস্থিত সবচেয়ে বড় বৃত্ত। এর থেকে বড় বৃত্ত পৃথিবীর উপর কল্পনা করা যায় না। নিরক্ষরেখার কেন্দ্র ও পৃথিবীর কেন্দ্র একই বিন্দুতে অবস্থিত।

          পৃথিবীর উপর অবস্থিত অন্যান্য অক্ষরেখার কেন্দ্র পৃথিবীর অক্ষ বা মেরু রেখার উপর অবস্থিত। এসব কারণে নিরক্ষরেখা কে মহাবৃত্ত বলা হয়। এর পরিধি 40076 কিলোমিটার।

যুক্তি সহকারে নিরক্ষরেখা কে মহাবৃত্ত বলার কারণ ব্যাখ্যা করো।

৩. ভূ-জালকের সাহায্যে কিভাবে ভূপৃষ্ঠে কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয় করা হয়?

উত্তর: গ্লোবের উপর অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখা পরস্পর ছেদ করার ফলে যে জালক সৃষ্টি হয় তাকে ভূ-জালক বলে। অক্ষরেখা গুলি পূর্ব-পশ্চিমে পরস্পরের সমান্তরালে থাকে এবং দ্রাঘিমা রেখা গুলি উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। প্রত্যেকটি অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমারেখার পৃথক পৃথক মান থাকে।

গোলাকার পৃথিবীর উপর ভূ-জালকের সাহায্যে অবস্থান নির্ণয়:- 

গোলাকার পৃথিবীর উপর কোনো স্থানের অবস্থান সেই স্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ এর মান অনুসারে হয়।


ভূ-জালকের সাহায্যে কিভাবে ভূপৃষ্ঠে কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয় করা হয়?

উপরের চিত্রে A,B,C,D প্রভৃতি স্থানের অবস্থান ওই স্থানকে ছেদকারী অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমা রেখার মান অনুসারে হবে।

মানচিত্রে ভূ জালকের মাধ্যমে অবস্থান নির্ণয় :

গ্লোবের ভূ জালক কে অঙ্ক এবং জ্যামিতির মাধ্যমে সমতল কাগজের ওপর পরিবর্তন করা হয়।একে বলে মানচিত্র অভিক্ষেপ। এই মানচিত্রে A,B,C,D প্রভৃতি স্থানের অবস্থান ওই স্থানকে ছেদকারি অক্ষরেখা এবং দ্রাঘিমা রেখার মান অনুসারে হবে।

ভূ-জালকের সাহায্যে কিভাবে ভূপৃষ্ঠে কোনো স্থানের অবস্থান নির্ণয় করা হয়?

৪. ১৮০ডিগ্রী দ্রাঘিমারেখাকে সম্পূর্ণ অনুসরণ করে মানচিত্রে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা অঙ্কন করা হয়নি কেন?

১৮০ ডিগ্রী দ্রাঘিমারেখাকে অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা অঙ্কন করা হয়। কিন্তু সম্পূর্ণভাবে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা ১৮০ ডিগ্রী দ্রাঘিমারেখাকে অনুসরণ করেনি। রেখাটিকে জলভাগের উপর দিয়ে অঙ্কন করা হলেও কিছু কিছু স্থানে স্থলভাগের উপর দিয়েও এই রেখাটি অঙ্কন করা হয়েছে। রেখাটির দুপাশে সময় ও তারিখ এর পার্থক্য হয়। এই অসুবিধা দূর করার জন্য রেখাটিকে কিছু কিছু স্থানে বাঁকিয়ে জলভাগের উপর দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যেমন - 

  • a.সাইবেরিয়ার উত্তর পূর্ব অংশে কিছুটা পূর্ব দিকে বাঁকানো হয়েছে।
  • b. আলুসিয়ান দ্বীপ পুঞ্জের নিকট পশ্চিম দিকে বাঁকানো হয়েছে।
  • c. ফিজি, চাথাম প্রভৃতি দ্বীপ পুঞ্জের নিকট পূর্ব দিকে বাঁকানো হয়েছে।
  • d.কিরিবাতি দ্বীপ পুঞ্জের নিকট পূর্ব দিকে বাঁকানো হয়েছে।

Previous Post Next Post