আমাদের সাথে জুড়ে থেকে প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হন অথবা হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করুন।লিংক নীচে দেওয়া আছে।
নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর লেখ:
১. নারী ইতিহাস চর্চার প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: সভ্যতার সূচনা লগ্ন থেকে বেশ কিছু ব্যতিক্রমী নারী ছাড়া যুগ যুগ ধরে পুরুষতন্ত্রের বঞ্চনা, অবহেলা ও অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই থেকেই নারী ইতিহাসের সূচনা হয়। উনিশ শতকে একদল ঐতিহাসিক উপলব্ধি করেন যে ইতিহাসে নারীদের যথার্থ মূল্যায়ন হয়নি, তখন থেকেই শুরু হয় নারী ইতিহাস চর্চা।
মানব সমাজের ভিত্তি অর্ধেক নর, অর্ধেক নারী। এই চিন্তা থেকেই মানব ইতিহাসকে পূর্ণাঙ্গ করার লক্ষ্যে ১৯৭০ এর দশক থেকে ইতিহাসে পুরুষদের কার্যকলাপের পাশাপাশি নারীদের ও কার্যকলাপ প্রথম সারিতে উঠে এসেছে। ইতিহাস চর্চায় সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, দেশ শাসন ব্যবস্থা প্রভৃতি ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের অংশগ্রহণের মূল্যায়ন প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। তাই বলা চলে ইতিহাস তাহলে শুধু 'His-story' নয়, 'Her-story' ও বটে।
২. গ্রামবার্তা প্রকাশিকা হল একটি ব্যতিক্রমী পত্রিকা- আলোচনা করো।
উত্তর: উনবিংশ শতকের অধিকাংশ পত্রপত্রিকায় কলকাতা শহর থেকে প্রকাশিত হতো। তাই সেই সব পত্র পত্রিকায় শহুরে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেনীর চিন্তা ও চেতনার প্রতিফলন ঘটেছিল। কিন্তু "গ্রামবার্তা প্রকাশিকা" ছিল একটি বাস্তবিক ই ব্যতিক্রমী পত্রিকা। বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী গ্রাম থেকে এটি প্রকাশিত হতো। প্রথাগত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত তথাকথিত অশিক্ষিত কাঙাল হরিনাথ ১৮৬৩খ্রিস্টাব্দে এই পত্রিকা প্রকাশ করেন।"গ্রামবার্তা প্রকাশিকা"র পূর্বে প্রকাশ পাওয়া পত্র-পত্রিকা গুলিতে গ্রামের মানুষ ছিল উপেক্ষিত। তাই গ্রামীণ সমাজ ও গ্রামের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করতে এই পত্রিকার আবির্ভাব হয়। কাঙাল হরিনাথ এই পত্রিকায় গ্রামীণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা, বঞ্চনার কথা তুলে ধরেন।
এই পত্রিকায় গ্রামীণ কৃষক পরিবারের উপর জমিদার ও নীলকর সাহেবদের শোষণ ও নির্মম অত্যাচার তীব্রভাবে সমালোচিত হয়। সমকালীন সময়ের প্রচলিত পত্রপত্রিকা যেখানে গ্রাম্য সাধারণ মানুষদের সমর্থন জানায়নি সেখানে "গ্রামবার্তা প্রকাশিকা"গ্রামীণ সমাজ ও জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে নিজের এক ব্যতিক্রমী ও স্বতন্ত্র জায়গা তৈরি করে নিয়েছিল।
৩. নীল বিদ্রোহ সম্পর্কে সমকালীন শিক্ষিত বাঙালি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন ছিল?
উত্তর:১৮৫৯-৬০ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হওয়া নীল বিদ্রোহে নীল চাষিরা বিদ্রোহ সংঘটিত করলে তৎকালীন শিক্ষিত বাঙালি সমাজ এই বিদ্রোহকে আন্তরিকভাবে সমর্থন জানিয়েছিল। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন- অক্ষয় কুমার দত্ত, শিশির কুমার ঘোষ, গিরিশ ঘোষ, দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ প্রমূখ। এছাড়াও "হিন্দু পেট্রিয়ট" পত্রিকার সম্পাদক হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বিদ্রোহের সমর্থনে কলম ধরেছিলেন। দীনবন্ধু মিত্র তার "নীলদর্পণ" নাটকের মাধ্যমে নীলকরদের অত্যাচারের কথা জনগণের সামনে তুলে ধরেছিলেন। এমনকি অনেক বাঙালি মধ্যবিত্ত শিক্ষিত মানুষ নীলচাষীদের মামলা মোকদ্দমার খরচ বহন করতেন। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে শিক্ষিত বাঙালি সমাজ ব্যাপকভাবে সিপাহী বিদ্রোহের সমর্থনে এগিয়ে আসেনি কিন্তু নীল বিদ্রোহের সমর্থনে আন্তরিকভাবে সরব হয়েছিল।
৪. উপযুক্ত তথ্য দিয়ে নিজের ছকটি পূরণ করো-
প্রতিষ্ঠান | ব্যক্তিত্ব | অন্যান্য উদ্যোগ |
---|---|---|
স্কুল বুক সোসাইটি ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দ | ডেভিড হেয়ার | ১.১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে পটলডাঙ্গা একাডেমি। ২.১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা। |
ব্রাহ্মসমাজ ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দ | রাজা রামমোহন রায় | ১. সতীদাহ প্রথা রদ। ২.১৮২৫ খ্রিস্টাব্দে বেদান্ত কলেজ প্রতিষ্ঠা। |
অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দ | ডিরোজিও | ১.১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে নব্যবঙ্গ বা ইয়ংবেঙ্গল প্রতিষ্ঠা। ২. পার্থেনান, এনকোয়ারার পত্রিকা প্রকাশ। |