বাংলা মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক পার্ট ৩ নবম শ্রেণী

আমাদের সাথে জুড়ে থেকে প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হন অথবা হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করুন।লিংক নীচে দেওয়া আছে।

বাংলা মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক পার্ট 3 নবম শ্রেণী

নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখ।

১."নব নব সৃষ্টি" প্রবন্ধে লেখক সংস্কৃত ভাষাকে আত্মনির্ভরশীল বলেছেন কেন? বর্তমান যুগে ইংরেজি ও বাংলা ভাষা আত্মনির্ভরশীল নই কেন?

উত্তর: "নব নব সৃষ্টি" প্রবন্ধে সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছেন - কোন নতুন চিন্তা, নতুন অনুভূতির জন্য কোন শব্দের প্রয়োজন দেখা দিলে সংস্কৃত ভাষা নিজ শব্দভান্ডারে খোঁজ নিয়ে দেখে যে কোন ধাতু বা শব্দ সেখানে আছে কিনা, যাকে অল্পবিস্তর বদলে নিয়ে বা পুরোনো ধাতুর সাহায্যেই নতুন শব্দটি গঠন করা যায় কিনা। অর্থাৎ অন্য ভাষার শব্দভাণ্ডার এর দিকে  তাকে নির্ভর করে থাকতে হতো না। এমনই সমৃদ্ধ সংস্কৃত ভাষা যে সে আপন মহিমায় মহিমান্বিত। এই কারণে লেখক সংস্কৃত ভাষাকে আত্মনির্ভরশীল ভাষা বলেছেন।

               লেখক এর মতে প্রয়োজনে ও অপ্রয়োজনে বাংলা ভাষা নিজের শব্দ ভান্ডারে অনুসন্ধান না করে ভিন্ন ভিন্ন ভাষা থেকে শব্দ নিয়েছে এবং নিচ্ছে। পাঠান মোগল যুগে আইন-আদালত, খাজনা-খারিজ নতুন ভাবে দেখা দিলে আমরা প্রচুর আরবি-ফারসি শব্দ গ্রহণ করেছি। পরবর্তীকালে ইংরেজি থেকে, ইংরেজির মারফত অন্যান্য ভাষা থেকেও অনেক শব্দ গ্রহণ করেছি। সেই জন্য বাংলা, ইংরেজি আত্মনির্ভরশীল ভাষা নয়।

২. "এরই মাঝে বাংলার প্রাণ"-বাংলার প্রাণস্পন্দন কবি কিভাবে উপলব্ধি করেছেন?

উত্তর: কবি জীবনানন্দ দাশ রচিত "আকাশে সাতটি তারা" কবিতায় প্রকৃতির রূপ দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। প্রকৃতি কবি জীবনানন্দের কাছে বাংলা শুধুমাত্র ভৌগোলিক সীমায় আবদ্ধ একটি ভূখণ্ড নয়, বাংলা তার কাছে এক জীবন্ত সত্তা। 

           কবিতায় কবি বঙ্গ প্রকৃতির বুকে নেমে আসা সান্ধ্য সৌন্দর্যের ছবি এঁকেছেন। একটু একটু করে আঁধারের মায়াময় আবছায়ায় ডুবে যাচ্ছে বাংলার মাঠ-ঘাট গাছপালা। উন্মুক্ত আকাশে সাতটি তারা ফুটে উঠেছে।ঠিক তখনই বাংলার গাছপালা, পশুপাখি, পুরনো স্মৃতি মানব-মানবীর গন্ধেও স্পর্শে পূর্ণ স্মৃতি মধুর ঐশ্বর্যের মধ্যে বাংলার প্রাণ কে আবিষ্কার করেছেন। নব ধানের গন্ধ, চাঁদা সরপুঁটির মৃদু গন্ধ, হাঁসের পালক, পুকুরের জল, কিশোরীর পায়ের দলা মলা ঘাস আর লাল বটফল এর ব্যথিত গন্ধের  ক্লান্ত নীরবতার মধ্যে কবি বাংলার প্রাণস্পন্দন উপলব্ধি করেছেন।

৩. "চিঠি" রচনা অবলম্বনে স্বামী বিবেকানন্দের স্বদেশ ভাবনার পরিচয় দাও।

উত্তর: পাঠ্য চিঠিটি স্বামী বিবকানন্দ ১৮৯৭ সালের ২৯জুলাই ভারতবর্ষের আলমোরা থেকে মিস নোবলের উদ্দেশ্যে লিখেছিলেন।

  স্বামীজি তৎকালীন ভারতের মানুষদের দুর্দশায় ব্যথিত, নারী সমাজের লাঞ্ছনায় পীড়িত ছিলেন। তাই তিনি মিস নোবলকে লেখেন - "এদেশের দুঃখ, কুসংস্কার, দাসত্ব প্রভৃতি কিধরনের তা তুমি ধারণা করতে পারো না"। 

দারিদ্র, অস্পৃশ্যতা, জাতি বর্ণের বৈষম্য , শ্বেতাঙ্গ ইংরেজ শাসকদের অত্যাচার ইত্যাদি থেকে ভারতবাসীর মুক্তির পথ খুঁজছেন তিনি। প্রখর ভাবে সমাজচেতন স্বামীজি এ দেশের সামাজিক ব্যাধি গুলিতে বিচলিত হয়েছেন। ইংরেজ কুশাসনের পাশাপাশি দুঃখ দারিদ্র, কুসংস্কার ইত্যাদি থেকে স্বদেশের মানুষকে মুক্তি দিতে চেয়েছেন তিনি।

৪. "যা গিয়ে ওই উঠানে তোর দাঁড়া"- কবি কাদের কেন এই পরামর্শ দিয়েছেন? কবিতার নামকরণের সঙ্গে উদ্ধৃতিটি কিভাবে সম্পর্কযুক্ত?

উত্তর: আলোচ্য কবিতাটি কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লেখা "অন্ধকার বারান্দা" কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত "আবহমান" কবিতার অংশ। 

         আলোচ্য কবিতায় কবি প্রবাসী বঙ্গবাসী দের গ্রামবাংলায় ফিরে যাওয়ার কথা বলেছেন। 

         আবহমান কথাটির অর্থ চিরকালীন। চিরকাল ধরে যা চলে।এই কবিতায় চিরকালীন এক সত্যকে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন কবি। শৈশবের প্রতি মানুষের গভীর মমতা ও ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে। তার আজন্ম পরিচিত উঠোন, উঠানের চারপাশে জল, হাওয়া, মাটি, সবুজ গাছপালা, ঘাসের গন্ধ, বাগান থেকে ভেসে আসা ফুলের সুগন্ধ ও উঠানের সঙ্গে তার সম্পর্ক যেন চিরদিনের। তাই কবি মানুষকে ফিরে যেতে বলেছেন বার বার।

         উঠান এর আভিধানিক অর্থ "আঙিনা" কিন্তু এখানে উঠান বলতে ভিটে হারা মানুষদের জন্মস্থান তথা মুক্ত পরিসরের কথা বলেছেন। আজন্ম পরিচিত মাটি, হাওয়ায় পূর্ণ প্রাণময় আশ্রয়স্থান এ ফিরে যাওয়ার পরামর্শই ধ্বনিত হয়েছে আলোচ্য কবিতায়।

৫. "...অগত্যা রাধারানী কাঁদিতে কাঁদিতে ফিরল"-রাধারানীর কান্নার কারণ কি?

উত্তর: মাহেশের রথের দিন রাধারানীর অসুস্থ মায়ের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে ওঠে। এই সময় পথ্যের প্রয়োজনে রাধারানী বনফুল জোগাড় করে মালা গেঁথে সেই মালা রথের মেলায় বিক্রি করে মায়ের জন্য পথ্য সংগ্রহ করবে ভেবেছিল। কিন্তু রথের টান অর্ধেক হতে না হতেই প্রচন্ড বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে যায়। রাধারানীর মনে আশা ছিল বৃষ্টি কমলে আবার মেলা বসবে। কিন্তু রাত বাড়লেও বৃষ্টি আর কমেনি। তাই তার মালা বিক্রি না হওয়ায় আশাহত বিপর্যস্ত রাধারানী কাদতে থাকে। মালা বিক্রি না হওয়ায় অসুস্থ মায়ের জন্য তার এই কান্না।

Previous Post Next Post