Geography Model Activity Task Part 1 Class 9 | মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক নবম শ্রেণী পার্ট 1 ভূগোল

আমাদের সাথে জুড়ে থেকে প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হন অথবা হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করুন।লিংক নীচে দেওয়া আছে।

নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও। 

১. "সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহের মধ্যে একমাত্র পৃথিবীই জীবকুলের আবাসস্থল"- বক্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো।

সৌরজগতের মোট আটটি গ্রহ রয়েছে। এদের মধ্যে সূর্যের থেকে দূরত্বের দিক দিয়ে পৃথিবী তৃতীয় স্থানে রয়েছে। সৌরজগতের মাত্র পৃথিবীতেই জীবের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায় কারণ এই গ্রহে জীবের বেঁচে থাকার উপযোগী পরিবেশ রয়েছে। কি কি কারনে পৃথিবীতে একমাত্র জীবের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায় তা নিচে আলোচনা করা হলো-

পৃথিবীর উষ্ণতা:- সূর্য গ্রহ গুলিকে উত্তপ্ত করে। সূর্য থেকে পৃথিবীর এমন এক দূরত্ব রয়েছে যার ফলে পৃথিবীর গড় উষ্ণতা 15⁰C থাকে যা মানুষ তথা সমস্ত জীবকুলের বসবাসের উপযোগী।

পৃথিবীর গতি:- পৃথিবী সূর্য থেকে প্রায় 15 কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পৃথিবী নিজের অক্ষের চারপাশে আবর্তন করায় দিনরাত্রি সংঘটিত হয়, ফলস্বরূপ জীবকুলের অস্তিত্ব পৃথিবীতে রয়েছে। যদি পৃথিবী আবর্তন না করত পৃথিবীর একপাশে অধিক উষ্ণতার কারণে এবং অপর পাশে অধিক শীতলতার কারণে জীবকুল বিপন্ন হতো।

অন্যদিকে পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির জন্য ঋতু পরিবর্তন হয়। উভয় গতির জন্য মানুষের কাজকর্ম এবং বিভিন্ন প্রকার ফসল চাষের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

পৃথিবীর অভিকর্ষ বল:- পৃথিবীর অভিকর্ষ বল এমন এক আদর্শ অবস্থায় রয়েছে যার ফলে মানুষ তথা জীবের বেঁচে থাকার উপযোগী হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন প্রভৃতি ঠিক ঠিক মাত্রায় বায়ুমণ্ডলের মধ্যে রয়েছে।

জলের উপস্থিতি:- জীবনধারণের অন্যতম প্রয়োজনীয় উপাদান জল। পৃথিবীই একমাত্র গ্রহ যেখানে জলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।পৃথিবীতে জলের যোগান অক্ষুন্ন রয়েছে জলচক্রের মাধ্যমে। জল পৃথিবীর জীবের ধারক।

অক্সিজেনের উপস্থিতি:-অক্সিজেন ছাড়া প্রাণী জগৎ এক মুহূর্তের জন্য বাঁচতে পারে না। জীবের বিপাক, জারণ, বিজারণ প্রভৃতি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন একমাত্র পৃথিবীতেই পাওয়া যায়।

২. চিত্রসহ দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধির সংঘটন বর্ণনা করো। 

পৃথিবীর অভিগত গোলক আকৃতি, পৃথিবীর আবর্তন গতি, উপবৃত্তাকার কক্ষপথ, পৃথিবীর পরিক্রমণ গতি, অক্ষরেখা 66 1/2 ডিগ্রী কোণে হেলে অবস্থান করায় পৃথিবীর সর্বত্র সব সময় দিন রাত্রি সমান থাকে না। নিন্মলিখিতভাবে পৃথিবীর দিন রাত্রির দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধি হয়ে থাকে।

21শে জুন (কর্কট সংক্রান্তি)-উত্তর গোলার্ধে দীর্ঘতম দিন:-

পৃথিবী সূর্যের চারপাশে পরিক্রমণ করতে করতে 21 জুন তারিখে এমন একটা পর্যায়ে এসে উপস্থিত হয় যখন সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। এই সময় উত্তর গোলার্ধ সূর্যের সবচেয়ে কাছের থাকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধ সবচেয়ে দূরে। এই সময় সুমেরু বৃত্ত থেকে সুমেরু বিন্দু পর্যন্ত 24 ঘন্টা সূর্যের আলো পেয়ে থাকে অর্থাৎ 24 ঘন্টায় দিন। সেই সময় কুমেরু বৃত্ত থেকে কুমেরু বিন্দু পর্যন্ত 24 ঘন্টায় রাত হয়।

চিত্র-

21শে জুন (কর্কট সংক্রান্তি)-উত্তর গোলার্ধে দীর্ঘতম দিন

21শে মার্চ ও 23শে সেপ্টেম্বর:- 

বছরের মাত্র এই দুটি দিনে সূর্য নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয় ফলে উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্য থেকে সমান দূরত্বে অবস্থান করে এবং ছায়া বৃত্ত সমস্ত অক্ষরেখা কে সমান দুই ভাগে ভাগ করে। ফলে পৃথিবীর সর্বত্র দিন ও রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হয় অর্থাৎ 12 ঘণ্টা করে হয়। বিষুব কথার অর্থ হলো সমান দিন রাত্রি। 21 শে মার্চ কে মহাবিষুব ও 23 শে সেপ্টেম্বর কে জলবিষুব বলা হয়।

চিত্র- 

21শে মার্চ ও 23শে সেপ্টেম্বর

22 ডিসেম্বর:-

22শে ডিসেম্বর তারিখে সূর্য মকরক্রান্তি রেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। ফলে দক্ষিণ গোলার্ধ এই সময় সূর্যের কাছাকাছি অবস্থান করে এবং উত্তর গোলার্ধ দূরে অবস্থান করে। কুমেরু বৃত্ত থেকে কুমেরু বিন্দু পর্যন্ত এই সময় 24 ঘন্টা দিন থাকে এবং সুমেরু বৃত্ত থেকে

সুমেরু বিন্দু পর্যন্ত 24 ঘন্টা রাত থাকে। এই দিনটিতে উত্তর গোলার্ধে দিন সবচেয়ে ছোট হয় এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড় হয়।

চিত্র - 

22 ডিসেম্বর

৩. প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তির মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করো।


প্রচলিত শক্তি অপ্রচলিত শক্তি
i) প্রচলিত শক্তি বহুকাল যাবৎ ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং এই শক্তি অনেক বেশি পরিমাণে উৎপাদন ও ব্যবহার হয়। i) অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার খুব বেশিদিন হয়নি। এই শক্তির উৎপাদন ও ব্যবহারের পরিমাণ খুবই কম।
ii) প্রচলিত শক্তির উৎপাদনে প্রযুক্তির প্রয়োগ উন্নতির সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। ii) অপ্রচলিত শক্তি উৎপাদনে এখনো পর্যন্ত সেভাবে প্রযুক্তিগত কলা-কৌশলের ব্যাপক উন্নতি ঘটেনি।
iii) প্রচলিত শক্তি উৎপাদনের উৎস গুলি পৃথিবীতে অসম ভাবে বন্টিত ও স্থানীকৃত। পৃথিবীর সর্বত্র কয়লা, খনিজ তেল ইত্যাদি পাওয়া যায় না। Riii) অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপ্রচলিত শক্তির উৎস গুলি পৃথিবীর সর্বত্র সহজে পাওয়া যায়। যেমন- সূর্যরশ্মি, বায়ু, জৈব গ্যাস ইত্যাদি।
iv) প্রতি একক শক্তির উৎপাদন ক্ষমতা যেমন বেশি, তেমন এর উৎপাদন ব্যয় বেশি। iv) প্রতি একক শক্তির উৎপাদনক্ষমতা যেমন কম, তেমন এর উৎপাদন ব্যয়ও কম।
v) জলবিদ্যুৎ ছাড়া অন্যান্য প্রচলিত শক্তি অপূর্ণভব এবং এদের সঞ্চয় সীমিত। নিকট ভবিষ্যতে এগুলি ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। v) অপ্রচলিত শক্তি পুনর্ভব ও নবীকরণযোগ্য। তাই একে বারবার ব্যবহার করা যায়। এই শক্তির ফুরিয়ে যাওয়ার কোন আশঙ্কা নেই।

৪. সম্পদ সংরক্ষণের সম্ভাব্য উপায় গুলি লেখ।

বিভিন্নভাবে সম্পদ সংরক্ষণ করা যায়। সম্পদ সংরক্ষণের উপায় গুলি হল-

  • i) সম্পদের অপ্রয়োজনীয় উৎপাদন ও ব্যবহার কমাতে হবে।
  • ii) সম্পদের অগ্রাধিকারভিত্তিক ব্যবহার করতে হবে।
  • iii) উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সম্পদের কার্যকরীতা বৃদ্ধি করতে হবে।
  • iv) বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সম্পদের ব্যবহার করতে হবে ও অপচয় রোধ করতে হবে।
  • v) সম্পদের পূর্ণ ব্যবহার করতে হবে।
  • vi) পুনর্ভব সম্পদ এর পরিকল্পনামাফিক ব্যবহার করতে হবে।
  • vii) সম্পদের পুনরায় ব্যবহার করে সম্পদ সংরক্ষণ করতে হবে।

Previous Post Next Post